Προωθημένο

বাংলাদেশের কৃষিজাত ফসল - বাংলা প্রবন্ধ রচনা

ভূমিকা : সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা আমাদের এ সোনার বাংলা বিচিত্র ফসলের দেশ। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় নদীমাতৃক এদেশের মাটিতে নানারকম ফসল ফলে। তাই এদেশের ৮০ ভাগ লোকের উপজীবিকা কৃষি। এ দেশের উৎপন্ন ফসল দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে। বাংলাদেশের কৃষিজাত ফসলের মধ্যে ধান, পাট, ইক্ষু, তামাক, তিল, সরিষা, গম, কলাই, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, ছোলা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
 
ধান : ধান হতে চাল হয় আর চাল হতে ভাত হয়। ভাত বাঙালিদের প্রধান খাদ্য। ধান এদেশের সর্বত্র জন্মে। এক সময়ে এদেশে এত ধান উৎপন্ন হত যে একে বঙ্গ-ভারতের শস্যভাণ্ডার বলা হয়। বরিশাল, পটুয়াখালী, রাজশাহী, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, ঢাকা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর অঞ্চলে প্রচুর ধান উৎপন্ন হয়।
 
পার্ট : পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকারী ফসল। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার ৬০ ভাগই পাট রপ্তানি করে অর্জিত হয়। এজন্য একে স্বর্ণসূত্র বা সোনালী আঁশ বলে। এদেশের সব এলাকাতেই পাটের চাষ হয়। তবে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি পাট জন্মে। পার্ট হতে চট, ব্যাগ, দড়ি, কার্পেট, কাগজ, সুতা ইত্যাদি তৈরি হয়।
 
ইক্ষু : ইক্ষু এক প্রকার তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ। এর রস সুমিষ্ট, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এটি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া, রংপুর, পাবনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ প্রভৃতি জেলায় প্রচুর পরিমাণে জন্মে। আখ থেকে গুড় ও চিনি তৈরি হয়।
 
তুলা : বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে কিছু কিছু তুলা জন্মে। একে রূপালী আঁশ বলে। তুলা দুপ্রকার – কার্পাস ও শিমুল। তুলা দ্বারা বালিশ হয়। কার্পাস তুলা দিয়ে কাপড়, লেপ ও তোষক তৈরি হয়।
 
তামাক : তামাক রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, কুমিল্লা প্রভৃতি জেলায়উৎপন্ন হয়। তামাক দিয়ে বিড়ি, সিগারেট, জর্দা ইত্যাদি তৈরি হয়।
 
তিল সরিষা : তিল ও সরিষা বাংলাদেশের সর্বত্র জনে। এদের দ্বারা তৈল হয়। এদের খৈল গরুর অতি উপাদেয় ও বলকারক খাদ্য। খৈল সার রূপেও ব্যবহৃত হয়।
 
গোল আলু : এদেশে প্রচুর গোল আলু জন্মে। দেশের সর্বত্রই গোল আলুর চাষ হয়। এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল বলে কৃষকেরা আলু চাষে খুব উৎসাহী। এটি তরকারি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া চপসহ নানা প্রকার উন্নত খাদ্য প্রস্তুত করতে এটি প্রয়োজন।
 
গম : গম একটি খাদ্যশস্য। উঁচু জমিতে এর চাষ হয়। বাংলাদেশে প্রায় সব অঞ্চলেই এটি উৎপাদিত হয়। গম ভাঙিয়ে আটা, ময়দা, সুজি ও ভূষি পাওয়া যায়। আটা, ময়দা ও সুজি আমাদের একটি বিশেষ খাদ্য। ভূষি গৃহপালিত পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
 
ফুটি-তরমুজ : এগুলো খুব উপাদেয় ফল। বাংলাদেশের কুমিল্লা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে এগুলো প্রচুর জন্মে। 
 
তরকারি : তরকারির মধ্যে লাউ, কুমড়া, শিম, করলা, পটল, বেগুন, শসা, ঢেঁড়স, টমেটো, পুঁইশাক, পালংশাক, মূলা প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। বাংলাদেশের সর্বত্রই এদের চাষ করা হয়।
 
উপসংহার : বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের ফলে উন্নত দেশসমূহে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এর দোলা এখনও আমাদের দেশের কৃষিতে পুরোপুরি লাগেনি। আমাদের দেশেও যদি আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে চাষাবাদ করা হয়, নব আবিষ্কৃত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয় এবং উন্নত জাতের বীজ প্রয়োগ করা হয়, তবে আমাদের কৃষিজাত ফসলের উৎপাদন বহুগুণে বাড়বে এবং আমাদের দেশের কৃষকগণকে অনুন্নত ও অসহায় জীবনযাপন করতে  হবে না।
Like
1
Προωθημένο
Upgrade to Pro
διάλεξε το πλάνο που σου ταιριάζει
Διαβάζω περισσότερα